বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় পেট্রল ঢেলে সেময়ে ও তার মাকে (স্ত্রী) ঘরে আটকে আগুন দেওয়ার পর বেল্লাল হোসেন নামে এক যুবক ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গত বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে। ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মেয়ে কারিমার (১০) মৃত্যু হয়। স্ত্রী সাজেনুর বেগমকে (৩০) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বেল্লাল হোসেনের বাড়ি জেলার তালতলী উপজেলায় সখিনা গ্রামে। প্রায় দেড় বছর আগে রুহিতা গ্রামের সাজেনুরকে চট্টগ্রামে পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় বিয়ে করেন। ১৫ দিন আগে স্ত্রী (সাজেনুর) স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে তাঁকে তালাক দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সাজেনুরকে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কারিমা ও বেল্লালের মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
সাজেনুরের চাচাতো ভাই মো. ইব্রাহিম জানান, বেল্লালের বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার ছকিনা এলাকায়। প্রায় দেড় বছর আগে সাজেনুরের সঙ্গে বেল্লালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের দাম্পত্য কলহ চলতে থাকে। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। তখন প্রায়ই বেল্লাল তাঁর স্ত্রী ও তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিতেন।
সাজেনুরের ফুফাতো বোন ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বোন সাজেনুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেছেন, ঘর দাউ দাউ করে যখন জ্বলছিল তখন সাজেনুর ও তাঁর মেয়ে কারিমা আক্তার ঘর থেকে বের হতে চাইলে মা-মেয়েকে রামদা দিয়ে ধাওয়া করে। এ কারণে তাঁরা ঘর থেকে আর বের হতে পারেননি। তখন আগুনে পুড়ে মেয়ে কারিমার সেখানেই মৃত্যু হয়।
রুহিতা গ্রামের গ্রামপুলিশ মো. হারুনার রশিদ জানান, বেল্লাল সব সময় টাকার লোভী ছিল। স্ত্রীর সব আয় সে কেড়ে নিত। এর আগে সে পাঁচ-ছয়টি বিয়ে করে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, সাজেনুরের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
পাথরঘাটা থানার ওসি হানিফ শিকদার বলেন, সাজেনুরের বাবা আবদুল মালেক আকন আজ (গতকাল) দুপুরে থানায় মামলা করেছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, শাজেনুরের অবস্থা সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।