বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় প্রবল স্রোতে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় পেচিবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০০ মিটার এলাকায় ৪ স্থানে প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একই সাথে ভাঙনের ঝুকিতে পড়েছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙনের ফলে বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচলকারী প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটেছে। শুক্রবার সকালের দিকে বাঁধে ভাঙনের এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ১৯৮৭ সালে ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি থেকে শেরপুর উপজেলার সাহেববাড়ী ঘাট পর্যন্ত বাঙালী নদীর পূর্ব তীরে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মান করেন সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প (ডিআইডিপি) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। এই বাঁধ নির্মানের ফলে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি, মথুরাপুর, গোপালনগর এবং শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ পরিবার প্রতি বছর বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।
এছাড়া বাঁধের ওপর দিয়ে ধুনট ও শেরপুর উপজেলার বথুয়াবাড়ি, পেঁচিবাড়ি, বিলকাজুলী, জালশুকা, চানদিয়াড়, কুমিরিয়াডাঙ্গা, ভুবনগাতি, চকধলী, চককল্যানী, গুয়াগাছি, জয়লা-জুয়ান, কল্যানী, বেলগাছি, জয়নগর, সুঘাট, রুদ্রবাড়িয়া, যুগিগাতি, নাগেশ্বরগাতি ও পাঁচথুপি-সরোয়াসহ ৫০গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে।
এদিকে, পানির প্রবল স্রোতে পেচিবাড়ি গ্রামের দক্ষিণ অংশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। অব্যাহত ভাঙনের ফলে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মাটির তৈরী বাঁধের ৪ স্থানে প্রায় ১০০মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে বাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলার পেচিবাড়ি গ্রামের ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র জানান, নির্মাণের পর থেকে ঈঁদুরের গর্ত, অতিবৃষ্টি এবং নদীর পানির প্রবল তোড়ে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়। অনেক দিন আগে বাঁধের কিছু অংশে মেরামত কাজ করা হয়। তবুও বাঁধের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের ফলে বাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, শুক্রবার বিকলে ৫টা পর্যন্ত বাঙালী নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে জরুরীভাবে মেরামত শুরু করা হয়েছে।